ফোনের ব্যাটারি লাইফ বাড়ানোর ১০ টি কার্যকর টিপস
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে? চার্জ একবার দিলেও সারাদিন টিকে না? এই সমস্যাগুলো আজকাল প্রায় সব ব্যবহারকারীর জন্যই মাথাব্যথার কারণ। তবে চিন্তার কিছু নেই! কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী অভ্যাস গড়ে তুললেই আপনি আপনার ফোনের ব্যাটারি লাইফকে অনেকটা বাড়িয়ে নিতে পারেন। এই পোস্টে আমরা এমন ১০টি tested & proven টিপস শেয়ার করেছি, যা মেনে চললে আপনার চার্জ থাকবে দীর্ঘক্ষণ, আর ফোনের পারফরম্যান্সও হবে আগের চেয়ে অনেক ভালো।
📱 ফোনের ব্যাটারি লাইফ বাড়ানোর ১০ টি কার্যকর টিপস
- ১. স্ক্রিন ব্রাইটনেস কমিয়ে দিন
- ২. ব্যাটারি সেভার মোড চালু করুন
- ৩. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করুন
- ৪. লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখুন
- ৫. অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করুন
- ৬. ডার্ক মোড ব্যবহার করুন
- ৭. অপ্রয়োজনীয় Wi-Fi ও Bluetooth বন্ধ রাখুন
- ৮. অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ করুন
- ৯. ব্যাটারির স্বাস্থ্য ঠিক রাখুন
- ১০. সঠিক চার্জিং অভ্যাস গড়ে তুলুন
১. স্ক্রিন ব্রাইটনেস কমিয়ে দিন
ফোনের ডিসপ্লে হলো ব্যাটারির সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী উপাদানগুলোর একটি। যদি আপনি সর্বদা স্ক্রিন ব্রাইটনেস উচ্চ পর্যায়ে রাখেন, তবে তা অপ্রয়োজনীয়ভাবে ব্যাটারির শক্তি খরচ বাড়িয়ে দেয়। তাই স্ক্রিন ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
অনেক স্মার্টফোনে "অ্যাডাপটিভ ব্রাইটনেস" বা "অটো ব্রাইটনেস" অপশন থাকে যা পরিবেশের আলো অনুযায়ী ব্রাইটনেস সামঞ্জস্য করে। এই ফিচারটি সক্রিয় রাখলে, তা নিজে থেকেই ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ করবে এবং ব্যাটারি সাশ্রয় করবে।
আরো পড়ুন: মোবাইল ধীর হয়ে গেলে কি করবেন সহজ টিপস ও সমাধান
এছাড়াও, যদি আপনি ম্যানুয়ালি ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে সেটিংসে গিয়ে ডিসপ্লে অপশনে ঢুকে স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে দিন। এটি বিশেষ করে রাতে বা ঘরের ভিতরে ফোন ব্যবহার করার সময় কার্যকর। কম ব্রাইটনেস শুধু ব্যাটারি নয়, চোখের সুরক্ষার ক্ষেত্রেও সহায়ক।
২. ব্যাটারি সেভার মোড চালু করুন
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস, সিস্টেম প্রসেস এবং অতিরিক্ত রিসোর্স ব্যবহার। এ সমস্যার সমাধানে বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ও iPhone ডিভাইসে একটি ইনবিল্ট ফিচার হিসেবে ব্যাটারি সেভার মোড বা পাওয়ার সেভিং মোড দেওয়া থাকে। এই মোডটি চালু করলে ফোনের কার্যকারিতা কিছুটা সীমিত হলেও ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
ব্যাটারি সেভার মোড সক্রিয় হলে ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অ্যাপস বন্ধ করে দেয়, ডিসপ্লে রিফ্রেশ রেট কমিয়ে দেয়, সিঙ্কিং ও লোকেশন সার্ভিস সীমিত করে এবং অতিরিক্ত অ্যানিমেশন বন্ধ রাখে। এসব পরিবর্তনের ফলে ব্যাটারি অনেকক্ষণ পর্যন্ত স্থায়ী থাকে, বিশেষ করে যখন ফোন চার্জ দেওয়ার সুযোগ নেই।
আপনি সহজেই সেটিংস > ব্যাটারি অথবা সেটিংস > ডিভাইস কেয়ার > ব্যাটারি সেকশনে গিয়ে এই মোডটি চালু করতে পারেন। অনেক ডিভাইসে আবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট শতাংশ (যেমন ১৫% বা ২০%) ব্যাটারি অবশিষ্ট থাকলে ব্যাটারি সেভার মোড চালু হয়ে যায়। চাইলে আপনি ম্যানুয়ালি এটি আগেই চালু রাখতে পারেন।
উপসংহার: যখনই আপনি দেখবেন আপনার ফোনের ব্যাটারি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে বা চার্জ দেওয়ার সুযোগ নেই, তখন ব্যাটারি সেভার মোড চালু করাটা হবে একটি কার্যকরী ও বুদ্ধিমান পদক্ষেপ। এটি আপনার ফোনের ব্যবহার সময় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করুন
স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময় আমরা সচরাচর অনেক অ্যাপ চালু রাখি এবং ব্যবহার শেষে সরাসরি হোম বাটনে চলে আসি। কিন্তু এই অ্যাপগুলো পুরোপুরি বন্ধ না হয়ে ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে এবং ব্যাটারি ধীরে ধীরে ক্ষয় করতে থাকে। এজন্য ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস যা ফোনের ব্যাটারি লাইফ সাশ্রয়ে বড় ভূমিকা রাখে।
অ্যান্ড্রয়েড ও iOS উভয় প্ল্যাটফর্মেই ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস ফোনের র্যাম ও প্রসেসরের উপর চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ব্যাটারির ওপর বাড়তি লোড পড়ে। আপনি যদি নিয়মিত ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ না করেন, তবে আপনার ফোন দ্রুত গরম হতে পারে এবং ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে।
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করতে আপনি আপনার ফোনের রিসেন্ট অ্যাপ বাটনে ক্লিক করে সোয়াইপ করে অ্যাপ বন্ধ করতে পারেন। এছাড়াও, Settings > Apps > Running Apps বা Battery Usage অপশনে গিয়ে দেখে নিতে পারেন কোন কোন অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে বেশি ব্যাটারি খরচ করছে এবং সেগুলোকে ফোর্স স্টপ করে দিতে পারেন।
অতিরিক্ত টিপস: কিছু অ্যাপ যেমন সোশ্যাল মিডিয়া, লোকেশন ট্র্যাকিং বা স্ট্রিমিং অ্যাপস স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ চালিয়ে যায়। এই ধরনের অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড পারমিশন অক্ষম করে দিলে ব্যাটারির উপর চাপ অনেকটাই কমে যায়।
৪. লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখুন
স্মার্টফোনের GPS বা লোকেশন সার্ভিস অত্যন্ত শক্তিশালী একটি ফিচার হলেও এটি ব্যাটারি খরচের অন্যতম বড় উৎস। যখন কোনো অ্যাপ আপনার অবস্থান ট্র্যাক করে, তখন তা নিয়মিতভাবে স্যাটেলাইট, ওয়াই-ফাই, এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে লোকেশন আপডেট পাঠায়, যা ব্যাটারির উপর বড় প্রভাব ফেলে। তাই অপ্রয়োজনীয় অবস্থায় লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখা ব্যাটারি সাশ্রয়ের একটি কার্যকর উপায়।
আপনি আপনার ফোনের Settings > Location বা Settings > Privacy সেকশনে গিয়ে লোকেশন সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে পারেন, অথবা নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপের জন্য লোকেশন পারমিশন সীমাবদ্ধ করে দিতে পারেন (যেমন: “While using the app” বা “Ask every time”)।
বিশেষত যখন আপনি ভ্রমণে নেই বা ম্যাপ অ্যাপ ব্যবহার করছেন না, তখন লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখলে তা শুধু ব্যাটারি সাশ্রয়ই করে না, বরং আপনার গোপনীয়তাও রক্ষা করে। শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় এটি অন করলে ফোনের পারফরম্যান্স উন্নত থাকে এবং চার্জ অনেকক্ষণ ধরে টিকে থাকে।
৫. অটো অ্যাপ আপডেট বন্ধ করুন
গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপ আপডেট করে রাখে যাতে আপনি সর্বশেষ ফিচার ও নিরাপত্তা আপডেট পেতে পারেন। তবে এই অটো অ্যাপ আপডেট অপশনটি ব্যাটারি খরচ এবং ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যখন আপনি মোবাইল ডেটা ব্যবহার করছেন বা ফোন চার্জে নেই।
অনেক সময় অ্যাপ আপডেট করার সময় ফাইল ডাউনলোড, ইনস্টলেশন প্রসেস, এবং ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি চালু থাকে যা ব্যাটারির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। তাই আপনি চাইলে Settings > Google Play Store > Auto-update apps থেকে “Don't auto-update apps” অথবা “Over Wi-Fi only” অপশন বেছে নিতে পারেন।
এটি শুধু ব্যাটারি সাশ্রয় করে না, বরং আপনাকে একটি নির্ভরযোগ্য সময় বেছে নিয়ে ম্যানুয়ালি অ্যাপ আপডেট করার সুযোগও দেয়। এতে করে আপনি নির্দিষ্টভাবে কোন অ্যাপটি আপডেট করবেন তা নির্ধারণ করতে পারবেন, এবং অপ্রয়োজনীয় আপডেট এড়ানো যাবে।
৬. ডার্ক মোড ব্যবহার করুন
আধুনিক স্মার্টফোনগুলোর অধিকাংশেই এখন ডার্ক মোড ফিচার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই মোডটি স্ক্রিনের ব্যাকগ্রাউন্ডকে গা dark করে এবং টেক্সটকে হালকা রঙে প্রদর্শন করে, যা শুধু চোখের আরামই নিশ্চিত করে না, বরং ব্যাটারি সাশ্রয়ের দিক থেকেও কার্যকর। বিশেষ করে AMOLED বা OLED স্ক্রিনযুক্ত ডিভাইসগুলোতে ডার্ক মোড ব্যবহারের ফলে স্ক্রিনে কালো অংশগুলো আলো নিঃসরণ করে না, ফলে ব্যাটারি খরচ কমে যায়।
আপনি আপনার ফোনের Settings > Display > Theme অপশনে গিয়ে “Dark Mode” অথবা “Night Mode” চালু করতে পারেন। অনেক ফোনে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী (যেমন: সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত) স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডার্ক মোড চালু রাখার অপশনও থাকে।
ডার্ক মোড শুধু সিস্টেম লেভেলেই নয়, জনপ্রিয় অ্যাপ যেমন ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, গুগল ক্রোম, এবং হোয়াটসঅ্যাপে আলাদাভাবে চালু করা যায়। আপনি যদি নিয়মিত ফোন ব্যবহার করেন, বিশেষ করে রাতে বা অন্ধকার পরিবেশে, তবে ডার্ক মোড চোখের ক্লান্তি কমায় এবং ফোনের ব্যাটারিও দীর্ঘস্থায়ী করে।
উপসংহার: ডার্ক মোড একটি সহজ কিন্তু কার্যকরী উপায় যা আপনার ফোনের ব্যাটারি বাঁচাতে সাহায্য করে, সেইসাথে চোখের ওপর চাপ কমায়। তাই এটি ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৭. অপ্রয়োজনীয় Wi-Fi ও Bluetooth বন্ধ রাখুন
অনেক সময় ব্যবহারকারী ভুলে যান যে Wi-Fi বা Bluetooth চালু অবস্থায় রয়েছে, যদিও সেগুলোর প্রয়োজন নেই। অথচ এই Wi-Fi এবং Bluetooth সার্ভিসগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে নিয়মিতভাবে নেটওয়ার্ক ও ডিভাইস খুঁজে চলে, যা ফোনের ব্যাটারির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। তাই অপ্রয়োজনীয় সময়ে এগুলো বন্ধ রাখা ব্যাটারি সাশ্রয়ের একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।
আপনি যখন বাইরে থাকেন এবং কোনো নির্ভরযোগ্য Wi-Fi সংযোগ ব্যবহার করছেন না, তখন Wi-Fi চালু রাখা শুধু ব্যাটারি খরচই করে না, বরং ফোনের নিরাপত্তার দিক থেকেও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। একইভাবে, Bluetooth সার্ভিসও ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ চালিয়ে যায় এবং অন্যান্য ডিভাইসের সাথে কানেক্ট হওয়ার চেষ্টা করে, যা ব্যাটারি দ্রুত শেষ করে।
ফোনের Quick Settings প্যানেল বা Settings > Connections থেকে সহজেই Wi-Fi ও Bluetooth বন্ধ করা যায়। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য Airplane Mode-ও ব্যবহার করতে পারেন, বিশেষ করে যদি একান্তই কানেক্টিভিটির প্রয়োজন না থাকে।
উপসংহার: অপ্রয়োজনীয় Wi-Fi ও Bluetooth সার্ভিস বন্ধ রাখার অভ্যাস গড়ে তুললে তা ফোনের ব্যাটারির স্থায়িত্ব অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি একটি ছোট পদক্ষেপ হলেও দীর্ঘমেয়াদে আপনার ফোনের পারফরম্যান্স ও চার্জিং সময়ের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
৮. অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ করুন
স্মার্টফোনে প্রতিনিয়ত নানা অ্যাপ থেকে বিভিন্ন নোটিফিকেশন আসে—সোশ্যাল মিডিয়া, নিউজ, গেম, বা অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন। এই অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশনগুলো শুধু বিরক্তিকরই নয়, বরং প্রতিটি নোটিফিকেশন ডিসপ্লে হওয়ার সময় স্ক্রিন অন হয়, ভাইব্রেশন বা সাউন্ড চালু হয়—যার ফলে ব্যাটারির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। তাই অপ্রয়োজনীয় ও কম ব্যবহৃত অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা একটি কার্যকরী ব্যাটারি বাঁচানোর উপায়।
অ্যান্ড্রয়েড বা iOS—উভয় প্ল্যাটফর্মেই আপনি খুব সহজেই নির্দিষ্ট অ্যাপের নোটিফিকেশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। Settings > Notifications অপশনে গিয়ে আপনি দেখে নিতে পারেন কোন কোন অ্যাপ অপ্রয়োজনীয়ভাবে নোটিফিকেশন পাঠাচ্ছে এবং সেগুলো ডিসেবল করে দিতে পারেন।
বিশেষ করে নিউজ অ্যাপ, শপিং অ্যাপ, বা গেম অ্যাপগুলো দিনে বহুবার পুশ নোটিফিকেশন পাঠায় যা আসলে আপনার প্রয়োজনের বাইরে। এগুলোর নোটিফিকেশন বন্ধ করলে স্ক্রিন অন হওয়ার হার কমে, ফলে ব্যাটারি দীর্ঘক্ষণ টিকে থাকে।
পরামর্শ: আপনি চাইলে "Do Not Disturb" মোড ব্যবহার করতে পারেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, যেমন রাতের ঘুমের সময় বা কাজের সময়, যাতে ফোনের স্ক্রিন অপ্রয়োজনীয়ভাবে জ্বলে না ওঠে।
৯. ব্যাটারির স্বাস্থ্য ঠিক রাখুন
স্মার্টফোনের দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের জন্য ব্যাটারির স্বাস্থ্য (Battery Health) ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমরা এমন কিছু ভুল করে থাকি যা ব্যাটারির কার্যক্ষমতা দ্রুত হ্রাস করে। যেমন অতিরিক্ত চার্জে রাখা, ১০০% পর্যন্ত চার্জ করা বা ফোন সম্পূর্ণ ০% হয়ে যাওয়ার আগেই চার্জ না দেওয়া ইত্যাদি। এই ধরনের অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে ব্যাটারির লাইফ কমিয়ে দেয়।
ব্যাটারির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে চেষ্টা করুন ফোনের চার্জ ২০%-৮০% এর মধ্যে রাখার। এছাড়াও ফোন অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পরিবেশে ব্যবহার করলে ব্যাটারির ক্ষতি হয়, তাই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সচেতনতা দরকার। চার্জ দেওয়ার সময় ভারী গেম বা অ্যাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে ব্যাটারির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
অনেক স্মার্টফোনেই এখন “Battery Health” অপশন বা “Optimized Charging” ফিচার থাকে, যা ব্যাটারির স্বাস্থ্য রক্ষা করে। আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে ফোনটি ব্যবহার করতে চান এবং চার্জ ধরে রাখতে চান, তাহলে এই ফিচারগুলো সচল রাখা উচিত।
উপসংহার: নিয়মিত ও সঠিকভাবে ফোন চার্জ দেওয়া, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, এবং অপ্টিমাইজড চার্জিং চালু রাখার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যাটারির স্বাস্থ্য দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে পারবেন এবং প্রতিদিনের চার্জিং ঝামেলা অনেকটাই কমে যাবে।
১০. সঠিক চার্জিং অভ্যাস গড়ে তুলুন
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে সঠিক চার্জিং অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ফোনকে রাতভর চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন বা প্রায়ই ০% পর্যন্ত চার্জ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এই ধরনের অভ্যাস ব্যাটারির উপর দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং ব্যাটারির সক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফোনের ব্যাটারিকে সবসময় ২০% থেকে ৮০% চার্জের মধ্যে রাখাই সবচেয়ে ভালো। সম্পূর্ণ ১০০% চার্জ বা ০% পর্যন্ত ডাউন করা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এছাড়া, দ্রুত চার্জ (Fast Charging) অপশন সব সময় চালু না রেখে, প্রয়োজনে ব্যবহার করাই ভালো।
সঠিক চার্জিং অভ্যাসের আরেকটি দিক হলো মূল চার্জার ও ভালো মানের কেবল ব্যবহার করা। বাজারে প্রচলিত নিম্নমানের চার্জার ব্যাটারির স্বাস্থ্য নষ্ট করে দিতে পারে এবং ফোনের সার্কিটেও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ফোনের সাথে আসা মূল চার্জারই ব্যবহার করা সর্বোত্তম।
উপসংহার: চার্জ দেওয়ার নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলা, অতিরিক্ত চার্জ না করা এবং সঠিক চার্জার ব্যবহার করা—এই অভ্যাসগুলো আপনার ফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী রাখতে এবং প্রতিদিনের চার্জিং নির্ভরতাকে কমিয়ে আনতে দারুণভাবে সহায়তা করে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url