এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে চান? জেনে নিন সফলতার জন্য জরুরি ১০টি শর্ত
নতুন ব্লগারদের জন্য এডসেন্স এপ্রুভাল চেকলিস্ট: ১০টি বাধ্যতামূলক শর্ত
আপনি কি নতুন ব্লগার? গুগল এডসেন্সে আবেদন করেছেন কিন্তু এখনো এপ্রুভ হয়নি? তাহলে আপনার জন্যই এই পোস্ট! এডসেন্সের দরজা খুলে দেয়ার আগে গুগল চায় আপনি নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড পূরণ করেছেন কি না। অনেকেই এগুলো না জানার কারণে বারবার রিজেক্ট হয়ে থাকেন।
এই পোস্টে আমরা তুলে ধরছি ১০টি অপরিহার্য শর্ত যা একজন ব্লগারের অবশ্যই পূরণ করা উচিত যদি তিনি চান দ্রুত এবং নিশ্চিত এডসেন্স এপ্রুভাল। প্রতিটি পয়েন্ট বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যাতে আপনি সহজেই বুঝতে পারেন কী করলে সফল হওয়া যাবে।
তাহলে আর দেরি কেন? চলুন জেনে নেই সেই গুরুত্বপূর্ণ চেকলিস্ট যা আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারে গেম-চেঞ্জার হতে পারে!
১. মানসম্মত ও মৌলিক কনটেন্ট
গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার মূল চাবিকাঠি হলো মানসম্মত ও ১০০% মৌলিক কনটেন্ট। আপনার ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিটি পোস্ট যেন পাঠকের জন্য উপযোগী, তথ্যসমৃদ্ধ ও আকর্ষণীয় হয় – সেটাই গুগলের অগ্রাধিকার। কপি-পেস্ট কনটেন্ট কিংবা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে তৈরি ব্লগ কখনোই এপ্রুভাল পায় না।
গুগল এমন কনটেন্ট চায় যা মানুষের সমস্যার সমাধান দেয়, নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করে এবং পাঠকের সময়ের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে। সেজন্য লেখার সময় অবশ্যই নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন:
- নিজস্ব ভাষায় তথ্য উপস্থাপন করুন (AI টুল ব্যবহার করলেও নিজস্ব রিভিউ দিন)
- লম্বা এবং বিস্তারিত পোস্ট তৈরি করুন (সাধারণত ৮০০–১৫০০+ শব্দ)
- মূল কীওয়ার্ড ও LSI কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন প্রাকৃতিকভাবে
- উপ-শিরোনাম, তালিকা, চিত্র ইত্যাদি দিয়ে পঠনযোগ্যতা বাড়ান
- নিয়মিতভাবে কনটেন্ট আপডেট করুন যেন তা সর্বশেষ ও প্রাসঙ্গিক থাকে
মনে রাখবেন, একটি ভালো মানের কনটেন্ট শুধু এডসেন্স এপ্রুভালেই নয়, বরং গুগল র্যাংকে ও অর্গানিক ট্রাফিক আনার দিক থেকেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।
২. ডোমেইন বয়স ও সুনাম
অনেকেই মনে করেন কনটেন্ট থাকলেই গুগল এডসেন্স সহজে এপ্রুভ করে। তবে বাস্তবে ডোমেইনের বয়স ও এর সুনাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গুগল বিশ্বাস করে, পুরনো ও নিয়মিত ব্যবহৃত ডোমেইন সাধারণত বেশি নির্ভরযোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ইঙ্গিত বহন করে।
একটি কমপক্ষে ৩–৬ মাস পুরোনো ডোমেইন এডসেন্সের চোখে তুলনামূলক বেশি গ্রহনযোগ্য। যদিও গুগল সরাসরি ডোমেইনের বয়সকে বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে ঘোষণা করেনি, তবে এটি বিশ্বাসযোগ্যতা ও অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে।
ডোমেইনের সুনাম কিভাবে তৈরি করবেন?
- প্রথম দিন থেকেই নিয়মিত কনটেন্ট প্রকাশ করুন
- সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার ও ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করুন
- ব্যাকলিঙ্ক ও রেফারেন্স তৈরি করুন (SEO-এর জন্য সহায়ক)
- যেকোনো ধরনের স্প্যাম, কপিরাইট ভঙ্গ বা ভুয়া তথ্য থেকে বিরত থাকুন
- ডোমেইনের অথরিটি ও ট্রাস্ট স্কোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন
নতুন ওয়েবসাইট হলেও যদি আপনি শুরু থেকেই ভালো কনটেন্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য দিয়ে ওয়েবসাইট সাজান, তাহলে ডোমেইনের বিশ্বাসযোগ্যতা ধীরে ধীরে তৈরি হবে। আর এটি শুধু এডসেন্স নয়, গুগল র্যাংকেও সহায়তা করবে।
৩. প্রয়োজনীয় পেজসমূহ: About, Contact, Privacy Policy
গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় ও তথ্যপূর্ণ পেজ থাকা। বিশেষ করে About Us, Contact Us এবং Privacy Policy পেজ গুগলের কাছে সাইটের পেশাদারিত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রমাণস্বরূপ কাজ করে।
About Us পেজ কেন জরুরি?
এই পেজে আপনি কে, আপনার ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য কী, এবং আপনি দর্শকদের কী ধরনের তথ্য বা সেবা দিতে চান—তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন। এটি পাঠকদের আপনার সাইট সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দেয়, যা গুগলের চোখে ট্রাস্ট সিগন্যাল হিসেবে বিবেচিত হয়।
Contact Us পেজের গুরুত্ব
গুগল চায় ব্যবহারকারীরা আপনার সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারে। তাই একটি সক্রিয় যোগাযোগ পেজ থাকা আবশ্যক। এতে ইমেইল, কনট্যাক্ট ফর্ম, সামাজিক মাধ্যম লিংক বা ফোন নম্বর থাকতে পারে। এটি আপনার ওয়েবসাইটের পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করে।
Privacy Policy: গোপনীয়তা নীতিমালা
এই পেজটি আপনার সাইটে ভিজিটরের ডেটা কীভাবে সংগ্রহ ও ব্যবহার করা হয় তা স্পষ্টভাবে জানায়। গুগল এডসেন্স সহ যেকোনো বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের জন্য এটি আবশ্যিক শর্ত। এই পেজে কুকি ব্যবহার, থার্ড-পার্টি বিজ্ঞাপন, এবং ইউজার ইনফরমেশন সংগ্রহ নিয়ে বিস্তারিত থাকতে হবে।
এই পেজগুলো না থাকলে অনেক সময় আপনার ওয়েবসাইট Unprofessional বা Low Trust Site হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যা এডসেন্স এপ্রুভাল ও SEO র্যাংকে প্রভাব ফেলে।
- About Us পেজে নিজের ও সাইটের পরিচিতি দিন
- Contact Us পেজে যোগাযোগের বিস্তারিত দিন
- Privacy Policy পেজে স্পষ্টভাবে গোপনীয়তার নীতিমালা তুলে ধরুন
৪. মোবাইল ও ব্যবহারকারী বান্ধব ডিজাইন
বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিশাল একটি অংশ মোবাইল ডিভাইস থেকেই ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে থাকে। তাই মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন শুধু একটি সুবিধা নয়, বরং এটি এখন SEO ও গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল–এর জন্য অপরিহার্য শর্ত।
রেস্পনসিভ ডিজাইন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
- সব ডিভাইসে (মোবাইল, ট্যাব, ডেস্কটপ) সাইট ভালোভাবে দেখা যায়
- পাঠকের স্ক্রল ও ক্লিক সহজ হয় — যা Bounce Rate কমায়
- Google Mobile-First Indexing অনুযায়ী মোবাইল ভার্সনের ভিত্তিতে র্যাংক নির্ধারণ করে
- সাইটের গতি (Page Speed) বৃদ্ধি পায়, যা SEO-তে সরাসরি প্রভাব ফেলে
- ব্যবহারকারী সন্তুষ্টি বাড়ায় ও Engagement Rate উন্নত করে
ব্যবহারকারী বান্ধব ডিজাইন কেমন হওয়া উচিত?
শুধু মোবাইল ফ্রেন্ডলি হলেই হবে না, ডিজাইনটি হতে হবে User-Friendly। অর্থাৎ—
- সুবিন্যস্ত মেনু ও স্পষ্ট ন্যাভিগেশন
- সহজ পাঠযোগ্য ফন্ট ও উপযুক্ত কালার কনট্রাস্ট
- অতিরিক্ত পপআপ, বিজ্ঞাপন বা অনাকাঙ্ক্ষিত উপাদান পরিহার
- ভিজ্যুয়ালি আকর্ষণীয় কিন্তু লোড টাইমে হালকা ডিজাইন
- UX/UI অপ্টিমাইজেশন এর সাহায্যে পাঠক অভিজ্ঞতা উন্নত করুন
মনে রাখবেন, একটি মোবাইল ও ব্যবহারকারী বান্ধব সাইট কেবল গুগল র্যাংকে এগিয়ে রাখে না, বরং এডসেন্সের দৃষ্টিতেও সাইটের মান বাড়িয়ে তোলে। আপনি চাইলে গুগলের মোবাইল-ফ্রেন্ডলি টেস্ট টুল ব্যবহার করে আপনার সাইট পরীক্ষা করতে পারেন।
৬. কপিরাইটমুক্ত ও নিজস্ব ছবি ব্যবহার
গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পেতে চাইলে শুধু ভাল কনটেন্টই যথেষ্ট নয়, ছবার মান ও অধিকারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবসাইটে কপিরাইটমুক্ত বা নিজস্ব তোলা ছবি ব্যবহার করলে তা কনটেন্টকে আরও বিশ্বাসযোগ্য ও প্রফেশনাল করে তোলে। গুগলও এ ধরনের কনটেন্টকে বেশি গুরুত্ব দেয়।
কপিরাইটযুক্ত ছবি ব্যবহার করলে কী সমস্যা হতে পারে?
- Google AdSense থেকে rejection পেতে পারেন
- আইনগত জটিলতা বা DMCA complaint এর সম্মুখীন হতে পারেন
- Search Engine র্যাংকিং নষ্ট হতে পারে
- ওয়েবসাইটের ক্রেডিবিলিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়
ছবার উৎস কেমন হওয়া উচিত?
সেরা অভ্যাস হলো নিজের তোলা ছবি ব্যবহার করা। তবে আপনি চাইলে নিচের কপিরাইট ফ্রি ইমেজ ওয়েবসাইটগুলো থেকেও ছবি নিতে পারেন—
SEO-র জন্য ইমেজ অপ্টিমাইজেশন
শুধু ছবি ব্যবহার করলেই হবে না, সেটি SEO-ফ্রেন্ডলি হতে হবে:
- Alt Text ব্যবহার করুন – কীওয়ার্ড সমৃদ্ধ ও অর্থবোধক
- ছবার সাইজ কমিয়ে Page Load Speed বাড়ান
- WebP ফরম্যাট ব্যবহার করুন – দ্রুত লোড হয়
- ফাইলের নাম রাখুন অর্থপূর্ণ (যেমন:
seo-friendly-image.jpg
)
গুগলের মতে, ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট এখন সার্চ র্যাংকিং-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই কপিরাইটমুক্ত ও নিজস্ব ছবি ব্যবহার শুধু এডসেন্স নয়, সার্বিকভাবে ওয়েবসাইট উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
৭. জেনুইন ট্রাফিক ও উৎস
AdSense এপ্রুভাল পেতে হলে শুধু কনটেন্ট থাকলেই হয় না, ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ও জেনুইন ট্রাফিক থাকা আবশ্যক। গুগল এমন সাইট পছন্দ করে যেখানে অর্গানিক ভিজিটর আসে এবং যাদের ট্রাফিক সোর্স বিশ্বাসযোগ্য ও ন্যাচারাল। ফেক বা বট-জেনারেটেড ভিজিটর Google AdSense-এর চোখে সন্দেহজনক এবং এতে এপ্রুভাল পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
জেনুইন ট্রাফিক বলতে কী বোঝায়?
- Google Search থেকে অর্গানিক ভিজিটর
- সোশ্যাল মিডিয়া (Facebook, YouTube, Pinterest ইত্যাদি) থেকে ট্রাফিক
- ইমেইল নিউজলেটার বা সাবস্ক্রিপশন থেকে আগত ইউজার
- ব্লগ কমিউনিটি বা ফোরাম লিংক থেকে আগত ট্রাফিক
- ডিরেক্ট ট্রাফিক – যারা ওয়েবসাইটের নাম টাইপ করে ভিজিট করে
ফেক ট্রাফিক ও এর ক্ষতি
অনেকেই AdSense এপ্রুভাল পেতে বট ট্রাফিক, ক্লিক এক্সচেঞ্জ সাইট, পেইড ভিজিট ব্যবহার করেন। কিন্তু এসব কৌশল দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর। এতে আপনার সাইট Google-এর Policy Violation এর মধ্যে পড়ে এবং অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
গুগলে ভালো র্যাংক ও ট্রাফিক পেতে যা করবেন
- SEO অপ্টিমাইজড কনটেন্ট তৈরি করুন
- সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত শেয়ার করুন
- গেস্ট পোস্টিং ও ব্যাকলিংক স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করুন
- ইমেইল সাবস্ক্রিপশন চালু করুন এবং নিউজলেটার পাঠান
- Google Search Console এবং Analytics দিয়ে নিয়মিত ট্রাফিক মনিটর করুন
মনে রাখবেন, Google প্রতিটি সাইটের User Engagement, Bounce Rate ও Session Duration পর্যবেক্ষণ করে। তাই আপনি যদি জেনুইন ইউজার ধরে রাখতে পারেন, তাহলে AdSense approval এবং র্যাংকিং—দুই-ই সহজ হবে।
৮. গুগল এডসেন্স নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা
গুগল এডসেন্সে সফলতার মূল চাবিকাঠি হলো এর নীতি ও শর্তাবলীর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীলতা। AdSense একটি গ্লোবাল অ্যাড নেটওয়ার্ক যা বিজ্ঞাপনদাতাদের স্বার্থ রক্ষায় কঠোর নিয়ম অনুসরণ করে। তাই আপনার ওয়েবসাইট যদি Google AdSense Policies মেনে চলে, তাহলে approval পাওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যায়।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু এডসেন্স নীতিমালা
- কোনো রকম অশ্লীল, সহিংসতা বা ঘৃণা ছড়ায় এমন কনটেন্ট না থাকা
- ক্লিক চিটিং বা নিজের বিজ্ঞাপনে নিজেই ক্লিক না করা
- অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন ব্যবহার না করা – Better UX নিশ্চিত করা
- পপ-আপ, মালওয়্যার বা বিভ্রান্তিকর লিংক না থাকা
- প্রতারণামূলক বা অনৈতিক কাজ থেকে দূরে থাকা
নীতি মেনে চললে কী লাভ?
- দ্রুত এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার সুযোগ
- গুগলের কাছে বিশ্বস্ত প্রকাশক হিসেবে গণ্য হওয়া
- দীর্ঘমেয়াদে বিজ্ঞাপন আয় নিরাপদ ও স্থায়ী হওয়া
- সার্চ ইঞ্জিনে পজিটিভ র্যাংকিং সিগন্যাল
আপনি কীভাবে নীতি মেনে চলতে পারেন?
নিয়মিত Google AdSense Program Policies পড়ুন ও আপডেট থাকুন। প্রতিটি কনটেন্ট পাবলিশ করার আগে একবার ভেবে দেখুন – এটি কি Google-এর দৃষ্টিতে নিরাপদ এবং নীতিমালাভিত্তিক?
মনে রাখবেন, গুগল শুধু কনটেন্ট নয়, বরং আপনার আচরণ এবং মনোভাবও পর্যবেক্ষণ করে। তাই সততা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে একটি দায়িত্বশীল ও নীতিনির্ভর ব্লগ গড়ে তোলাই আপনার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
৯. পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্লগ পোস্ট
AdSense এপ্রুভাল পেতে হলে শুধুমাত্র একটি সুন্দর ডিজাইন বা ডোমেইন যথেষ্ট নয়—আপনার সাইটে পর্যাপ্ত ও গঠনগতভাবে সঠিক ব্লগ পোস্ট থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। গুগল চায় এমন ওয়েবসাইট, যেখানে ভিজিটররা নিয়মিত নতুন এবং মানসম্পন্ন কনটেন্ট পায়। এটি শুধু এপ্রুভাল পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায় না, বরং সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করতেও সহায়তা করে।
কতগুলো পোস্ট থাকা উচিত?
সাধারণভাবে, ১৫-২০টি মানসম্মত ও ইউনিক ব্লগ পোস্ট থাকলে তা AdSense এর জন্য গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে সংখ্যা নয়, বিষয়ের গভীরতা ও পাঠক উপযোগিতা গুগলের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ব্লগ পোস্ট কেমন হওয়া উচিত?
- প্রতিটি পোস্ট কমপক্ষে ৮০০-১০০০ শব্দের হওয়া উচিত
- মূল বিষয়বস্তু সমস্যা সমাধানমূলক এবং তথ্যবহুল হওয়া প্রয়োজন
- উপযুক্ত হেডিং, সাবহেডিং, বুলেট পয়েন্ট ও চিত্র ব্যবহার করা
- SEO ফ্রেন্ডলি ইউআরএল, মেটা ডেসক্রিপশন ও কীওয়ার্ড অপ্টিমাইজেশন
- প্রাসঙ্গিক অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক লিংক সংযুক্ত করা
আপনার ওয়েবসাইটে নিয়মিত পোস্ট করার উপকারিতা
- গুগলে ইনডেক্সিং দ্রুত হয়
- সার্চ ইঞ্জিন ট্রাফিক ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে
- পাঠকের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং রিটার্ন ভিজিট বাড়ে
- AdSense অ্যাকাউন্ট দীর্ঘস্থায়ী ও নিরাপদ থাকে
মনে রাখবেন, একটি Active Blog শুধুমাত্র Approval এর জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি আয় এবং সার্চ ভিজিটরের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই আপনি যদি নিয়মিত ও মানসম্মত কনটেন্ট প্রকাশ করেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট হবে গুগল এবং পাঠকের কাছে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
১০. সম্পূর্ণ এডসেন্স-রেডি ও অপটিমাইজড ওয়েবসাইট
একটি ওয়েবসাইটকে শুধুমাত্র ডিজাইন বা কনটেন্ট দিয়েই এডসেন্স-রেডি করা যায় না। সার্বিকভাবে সাইটটি প্রযুক্তিগত, কনটেন্ট এবং ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে অপটিমাইজড হতে হবে। এটি গুগলের কাছে প্রমাণ করে যে আপনার সাইট একটি পেশাদার, নিরাপদ এবং বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম।
একটি এডসেন্স-রেডি ওয়েবসাইটের বৈশিষ্ট্য
- SSL সার্টিফিকেট (https enabled) – নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য
- ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড দ্রুত (PageSpeed score ভালো)
- রেসপনসিভ ডিজাইন – মোবাইল, ট্যাব ও ডেস্কটপে ভালোভাবে দেখা যায়
- SEO অপটিমাইজড হেডিং, ট্যাগ ও কনটেন্ট স্ট্রাকচার
- 404 পেজ, robots.txt, ও XML sitemap যুক্ত
- প্রয়োজনীয় লিগ্যাল পেজ যেমন: About, Contact, Privacy Policy যুক্ত
- Ads.txt ফাইল ঠিকভাবে কনফিগার করা
অপটিমাইজেশন টিপস
- Google PageSpeed Insights দিয়ে সাইটের স্পিড টেস্ট করুন
- Google Search Console দিয়ে ইনডেক্সিং ও সমস্যা পর্যবেক্ষণ করুন
- Responsive ও Light-weight থিম ব্যবহার করুন
- SEO প্লাগইন (যেমন Rank Math বা Yoast SEO) ব্যবহার করে কনটেন্ট অপটিমাইজ করুন
একটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও অপটিমাইজড ওয়েবসাইট শুধুমাত্র Google AdSense approval-এর পথ সহজ করে না, বরং এটি সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র্যাংক, দ্রুত ইনডেক্সিং এবং পাঠকের অভিজ্ঞতা উন্নত করে। আপনার লক্ষ্য যদি হয় একটি দীর্ঘমেয়াদী সফল অনলাইন আয়, তাহলে এখনই আপনার ওয়েবসাইটটিকে পুরোপুরি AdSense-ready করে তুলুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url