OrdinaryITPostAd

বর্ষায় ঘর পরিষ্কার রাখার কার্যকর উপায়!


📑 পেজ সূচিপত্র

ক্রমিক বিষয়বস্তু
ভূমিকা
কাদামাটি নিয়ন্ত্রণের উপায়
আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে করণীয়
ফ্লোর পরিষ্কার রাখার টিপস
পোকামাকড় প্রতিরোধে ব্যবস্থা
পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নিশ্চিত করুন
আসবাবপত্রের যত্ন
দুর্গন্ধ ও ছত্রাক প্রতিরোধ
নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পরিষ্কার
১০ উপসংহার

১. ভূমিকা

বাংলাদেশে বর্ষাকাল মানেই একদিকে যেমন প্রকৃতির শীতলতা ও সবুজের ছোঁয়া, অন্যদিকে তেমনি শুরু হয় কাদামাটি, আর্দ্রতা এবং দুর্গন্ধের সমস্যা। এই সময়ে ঘর পরিষ্কার রাখা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ ও পোকামাকড়ের আক্রমণে ঘরের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। তাই বর্ষাকালে ঘর পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।

এই লেখায় আমরা আলোচনা করব বর্ষায় ঘর পরিষ্কার রাখার কিছু কার্যকর উপায় নিয়ে, যা আপনাকে শুধু ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখবে না, বরং আপনার পরিবারকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতেও সহায়তা করবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে আপনি সহজে ও কার্যকরভাবে আপনার বাসস্থান পরিষ্কার ও সুন্দর রাখতে পারেন এই বর্ষাকালে।

২. কাদামাটি নিয়ন্ত্রণের উপায়

বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি চোখে পড়ে তা হলো ঘরে কাদামাটি জমে যাওয়া। বিশেষ করে দরজার কাছে, বারান্দায় কিংবা প্রবেশপথে এই সমস্যা দেখা যায়, যা শুধু অস্বস্তিকরই নয়, বরং জীবাণুবাহীও হতে পারে। তাই কাদামাটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উচিত কার্যকর পদক্ষেপ।

প্রথমত, ঘরের প্রবেশপথে একটি শক্ত ও পানি শোষণকারী দরজাম্যাট ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। এটি বাইরে থেকে আসা ময়লা ও পানি আটকে রাখতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত, দরজার পাশে আলাদা করে জুতা রাখার স্থান নির্ধারণ করুন, যেন বাইরে ব্যবহৃত ভেজা জুতা ঘরে না ঢোকে। চাইলে একটি জুতার র‍্যাক অথবা প্লাস্টিক ট্রে ব্যবহার করতে পারেন।

তৃতীয়ত, প্রতিদিন একবার করে প্রবেশপথ ও আশেপাশের অংশ ঝাঁট ও মপ দিয়ে পরিষ্কার করুন। বর্ষায় ময়লা ও কাদা দ্রুত জমে, তাই নিয়মিত পরিষ্কার করলেই কাদামাটি জমার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। চাইলে ঘরের এই অংশে পানিরোধক (waterproof) ম্যাট পেতে দিতে পারেন যা পরিষ্কার করাও সহজ।

এই ছোট ছোট ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই বর্ষার দিনে ঘরকে কাদামুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। শুধু একটু সচেতনতা ও নিয়মিত যত্নই আপনার বাসস্থানের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে পারে।

২. কাদামাটি নিয়ন্ত্রণের উপায়

বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি চোখে পড়ে তা হলো ঘরে কাদামাটি জমে যাওয়া। বিশেষ করে দরজার কাছে, বারান্দায় কিংবা প্রবেশপথে এই সমস্যা দেখা যায়, যা শুধু অস্বস্তিকরই নয়, বরং জীবাণুবাহীও হতে পারে। তাই কাদামাটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উচিত কার্যকর পদক্ষেপ।

প্রথমত, ঘরের প্রবেশপথে একটি শক্ত ও পানি শোষণকারী দরজাম্যাট ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। এটি বাইরে থেকে আসা ময়লা ও পানি আটকে রাখতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত, দরজার পাশে আলাদা করে জুতা রাখার স্থান নির্ধারণ করুন, যেন বাইরে ব্যবহৃত ভেজা জুতা ঘরে না ঢোকে। চাইলে একটি জুতার র‍্যাক অথবা প্লাস্টিক ট্রে ব্যবহার করতে পারেন।

তৃতীয়ত, প্রতিদিন একবার করে প্রবেশপথ ও আশেপাশের অংশ ঝাঁট ও মপ দিয়ে পরিষ্কার করুন। বর্ষায় ময়লা ও কাদা দ্রুত জমে, তাই নিয়মিত পরিষ্কার করলেই কাদামাটি জমার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। চাইলে ঘরের এই অংশে পানিরোধক (waterproof) ম্যাট পেতে দিতে পারেন যা পরিষ্কার করাও সহজ।

এই ছোট ছোট ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই বর্ষার দিনে ঘরকে কাদামুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। শুধু একটু সচেতনতা ও নিয়মিত যত্নই আপনার বাসস্থানের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে পারে।

৩. আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে করণীয়

বর্ষাকালে ঘরের ভেতরে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত আর্দ্রতা শুধু ঘরের দেয়াল ও মেঝেতে ছত্রাক সৃষ্টি করে না, বরং বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে শ্বাসকষ্ট, এলার্জি ও ছত্রাক-সংক্রান্ত রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই বর্ষায় ঘরের ভেতরে আদ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আর্দ্রতা কমাতে প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করছে কিনা। দিনে অন্তত একবার জানালা-দরজা খুলে ঘরে প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস ঢুকতে দিন। যদি বাইরের বাতাস বেশি আর্দ্র হয়, তাহলে ডি-হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ঘরের অতিরিক্ত আর্দ্রতা শোষণ করে পরিবেশকে শুকনো রাখে।

ঘরের কোণ ও যেসব স্থান কম আলো পায়, সেখানে আর্দ্রতা বেশি জমে থাকে। এসব জায়গায় নিয়মিত শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলা এবং মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করাও কার্যকর হতে পারে। রান্নাঘর ও বাথরুমে এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করলে সেখানকার আর্দ্রতা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

আদ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখলে ঘর শুধু আরামদায়কই নয়, বরং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হয় বর্ষার দিনে। তাই এ বিষয়ে নিয়মিত নজর রাখা ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক।

৪. ফ্লোর পরিষ্কার রাখার টিপস

বর্ষাকালে ঘরের ফ্লোর বা মেঝে পরিষ্কার রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাইরে থেকে ভেজা পা, কাদা কিংবা পানি ঢুকে ঘরের ফ্লোরকে নোংরা করে ফেলে। এতে ঘর যেমন অপরিচ্ছন্ন দেখায়, তেমনি ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের উপদ্রবও বেড়ে যায়। তাই এই সময়ে ফ্লোর পরিষ্কার রাখতে কিছু কার্যকর উপায় অবলম্বন করা জরুরি।

প্রথমেই দরজার পাশে একটি বড় ও পানি শোষণক্ষম ম্যাট বা পায়ঁচারি পেতে দিন, যা বাইরে থেকে আসা কাদা ও পানিকে আটকে রাখবে। ফ্লোরে যাতে পানি জমে না থাকে সেজন্য দিনে অন্তত ২-৩ বার মপ ব্যবহার করে মুছে নিন। মপিংয়ের জন্য জীবাণুনাশকযুক্ত তরল ব্যবহার করলে অতিরিক্ত সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

টাইলস বা মার্বেল ফ্লোর হলে তা ফ্যাকাশে বা পিচ্ছিল হয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে পরিষ্কার করলে ফ্লোর চকচকে ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত থাকে। কাঠের মেঝের ক্ষেত্রে খুব বেশি পানি ব্যবহার না করে হালকা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নেয়া ভালো।

ফ্লোরে যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়, সেজন্য নিয়মিত সুগন্ধি জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন। বর্ষায় পোকামাকড় ও জীবাণু সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, তাই ফ্লোর পরিষ্কার রাখার অভ্যাস শুধু সৌন্দর্য নয়, স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও অপরিহার্য।

৫. পোকামাকড় প্রতিরোধে ব্যবস্থা

বর্ষাকালে পোকামাকড়ের উপদ্রব অনেক বেশি বেড়ে যায়। বিশেষ করে মশা, মাছি, তেলাপোকা, ছারপোকা ও উঁইপোকা এই সময়ে দ্রুত বংশ বিস্তার করে এবং ঘরের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলে। তাই বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই পোকামাকড় প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

প্রথমত, ঘরের প্রতিটি কোণ, ফাটল ও জানালার ফাঁক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন এবং প্রয়োজনে সিল করে দিন যাতে পোকামাকড় ঢুকতে না পারে। মশা ও মাছির বিরুদ্ধে মশারি, মশা তাড়ানোর স্প্রে, অথবা ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

তেলাপোকা বা উঁইপোকার আক্রমণ হলে বোরিক পাউডার, ন্যাপথালিন বল অথবা বাজারজাত কীটনাশক ব্যবহার করুন। তবে এসব রাসায়নিক ব্যবহার করার সময় অবশ্যই শিশুর নাগালের বাইরে ও খাদ্যদ্রব্য থেকে দূরে রাখতে হবে। চাইলে ঘরোয়া উপায়ে লবঙ্গ, তুলসি পাতা, লেবুর রস, বা ইউক্যালিপটাস অয়েলও ব্যবহার করা যেতে পারে, যেগুলো প্রাকৃতিকভাবে পোকামাকড় দূরে রাখতে সহায়ক।

নিয়মিত ময়লা ফেলা, রান্নাঘর পরিষ্কার রাখা, খাবার ঢাকা দিয়ে রাখা এবং পানির পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে – এসব ছোট ছোট অভ্যাসও পোকামাকড়ের প্রজনন বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। একটি পোকামাকড়মুক্ত ঘর শুধু পরিচ্ছন্নতাই নয়, বরং পরিবারকে রোগবালাই থেকে রক্ষার অন্যতম উপায়।

৬. পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নিশ্চিত করুন

বর্ষাকালে ঘরের ভেতরে স্যাঁতসেঁতে ও বন্ধ পরিবেশ তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এর ফলে ঘরে দুর্গন্ধ, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সময়ে ঘরে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।

প্রতিদিন অন্তত একবার জানালা-দরজা খুলে ঘরের বাতাসে চলাচলের সুযোগ দিন। এতে ভেতরের ভেজা ও দূষিত বাতাস বের হয়ে যায় এবং তাজা বাতাস ঘরে প্রবেশ করে। সকালবেলার রোদ যতটা সম্ভব ঘরে ঢোকানোর চেষ্টা করুন, কারণ সূর্যের আলো ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে কাজ করে।

যেসব ঘরে জানালা কম বা আলো-বাতাস কম প্রবেশ করে, সেখানে এক্সজস্ট ফ্যান বা ভেন্টিলেশন ফ্যান ব্যবহার করা ভালো। বিশেষ করে রান্নাঘর ও বাথরুমে ভেন্টিলেশন নিশ্চিত না করলে সেখানকার আর্দ্রতা ও দুর্গন্ধ সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।

পর্যাপ্ত আলো-বাতাস শুধু ঘরের পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে না, বরং মন-মানসিকতার উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই বর্ষাকালেও যতটা সম্ভব ঘরকে উন্মুক্ত ও বায়ু চলাচল উপযোগী করে তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

৭. আসবাবপত্রের যত্ন

বর্ষাকালে ঘরের আসবাবপত্র, বিশেষ করে কাঠের তৈরি আসবাব, আর্দ্রতার কারণে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কাঠ ফুলে ওঠা, রঙ পরিবর্তন, ছত্রাক জমা ও দুর্গন্ধ – এসব সমস্যার মুখে পড়তে হয় এই সময়ে। তাই বর্ষায় আসবাবপত্রের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

প্রথমত, কাঠের আসবাব যেন সরাসরি দেয়াল বা ভেজা মেঝের সংস্পর্শে না আসে তা নিশ্চিত করুন। বর্ষায় দেয়াল ও মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়, যা কাঠের মধ্যে আর্দ্রতা প্রবেশ করিয়ে দেয়। চাইলে আসবাবের নিচে প্লাস্টিক বা রাবার প্যাড ব্যবহার করতে পারেন।

দ্বিতীয়ত, নিয়মিত শুকনো ও নরম কাপড় দিয়ে আসবাবের ধুলা ও আর্দ্রতা মুছে ফেলুন। মাঝে মাঝে কাঠের পালিশ বা ফার্নিচার প্রোটেকটিভ অয়েল ব্যবহার করলে আসবাবের গায়ে একটি সুরক্ষার স্তর তৈরি হয়, যা আর্দ্রতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

তৃতীয়ত, কাপড়ের সোফা, কুশন বা পর্দা বর্ষায় দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যেতে পারে। এগুলো নিয়মিত রোদে শুকানো এবং পরিষ্কার করা দরকার। যদি রোদ পাওয়া না যায়, তবে ডিওডোরাইজার বা ফ্যাব্রিক স্প্রে ব্যবহার করে দুর্গন্ধ দূর করা যেতে পারে।

সঠিক যত্ন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে বর্ষাকালে আসবাবপত্রের স্থায়িত্ব ও সৌন্দর্য দুটোই রক্ষা করা যায়। এটি শুধু আপনার ঘরের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, বরং ভবিষ্যতের খরচও কমিয়ে দেয়।

৮. দুর্গন্ধ ও ছত্রাক প্রতিরোধ

বর্ষাকালে ঘরের ভেতরে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে দুর্গন্ধ এবং ছত্রাক বা ফাংগাসের সমস্যা খুব সাধারণ ব্যাপার। দীর্ঘ সময় ধরে বাতাস চলাচল না থাকলে এবং আর্দ্রতা জমে থাকলে ঘরের দেয়াল, ছাদ, কাপড়, বিছানা বা আসবাবপত্রে ছত্রাক জন্ম নিতে পারে। এটি শুধু ঘরের পরিবেশ নষ্ট করে না, বরং শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি ও চর্মরোগের কারণও হতে পারে।

দুর্গন্ধ ও ছত্রাক প্রতিরোধে প্রথম করণীয় হলো ঘরের বাতাস চলাচল নিশ্চিত করা। দিনে অন্তত একবার দরজা-জানালা খুলে ঘরে প্রাকৃতিক বাতাস ও আলো প্রবেশ করান। প্রয়োজনে ডিহিউমিডিফায়ার বা এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন, বিশেষ করে বাথরুম, রান্নাঘর ও কম আলো পাওয়া ঘরগুলোতে।

দ্বিতীয়ত, যেসব স্থানে পানি জমে থাকতে পারে – যেমন বেসিনের নিচে, জানালার কোনায়, রান্নাঘরের পাশে – সেসব স্থান নিয়মিত শুকিয়ে মুছে ফেলুন। এ ছাড়া কাপড়, তোয়ালে, বিছানার চাদর ও পর্দা সপ্তাহে অন্তত একবার ধুয়ে রোদে শুকানো উচিত।

দুর্গন্ধ দূর করতে ঘরে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন বেকিং সোডা, লবঙ্গ, লেবু ও চারকোল পাউচ ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া বাজারে সহজলভ্য অ্যান্টি-ফাংগাল স্প্রে ও সুগন্ধি রুম ফ্রেশনারও কার্যকর। ছত্রাক দেখা দিলে দ্রুত তা পরিষ্কার করুন, প্রয়োজনে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করুন।

সঠিক যত্ন ও নিয়মিত পরিস্কারের মাধ্যমে বর্ষায় দুর্গন্ধ ও ছত্রাকজনিত সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়, এবং ঘরের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হয়।

৯. নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পরিষ্কার

বর্ষাকালে ঘর পরিষ্কার রাখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগুলোর একটি হলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তোলা। শুধু একবার পরিষ্কার করলেই হবে না, বরং প্রতিদিনের ভিত্তিতে ঘরের প্রতিটি অংশে নজর রাখা জরুরি। কারণ এই সময়ে আর্দ্রতা, কাদা, ছত্রাক, পোকামাকড় ও দুর্গন্ধ দ্রুত বাড়ে এবং ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিদিন সকালে ঘরের মেঝে, বারান্দা, প্রবেশপথ এবং রান্নাঘর পরিষ্কার করা উচিত। বিশেষ করে যেখানে পানি জমে থাকতে পারে বা ময়লা জমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেসব স্থানে বাড়তি মনোযোগ দিন। সপ্তাহে অন্তত একবার ঘরের কোণ, ফার্নিচারের পেছন দিক, এবং বাথরুম-বেসিনের আশেপাশে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে পরিষ্কার করুন।

রান্নাঘরের বর্জ্য, বাসন, চুলার পাশে জমে থাকা তেল-ময়লা প্রতিদিন পরিষ্কার করা প্রয়োজন। একইভাবে, বাথরুম ও টয়লেটের ফ্লোরে জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন যাতে ব্যাকটেরিয়া ও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে না পড়ে।

এছাড়া ঘরের সদস্যদের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা এবং সবাইকে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়াও কার্যকর হতে পারে। এভাবে সবার মিলিত প্রচেষ্টায় বর্ষার যেকোনো ধরণের ঘর নোংরা হওয়া ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১০. উপসংহার

বর্ষাকালে ঘর পরিষ্কার রাখা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হলেও, সঠিক পরিকল্পনা ও নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে এটি খুব সহজ এবং কার্যকরী হতে পারে। কাদামাটি নিয়ন্ত্রণ, আর্দ্রতা কমানো, পোকামাকড় প্রতিরোধ, এবং পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নিশ্চিত করা—এসব উপায় মেনে চললে আপনার বাসস্থান হবে সুস্থ, পরিচ্ছন্ন এবং আরামদায়ক।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি নিয়মিত মনোযোগ বর্ষার সময় স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমায় এবং আপনার পরিবারকে দেয় নিরাপদ ও সুখী পরিবেশ। এছাড়া, আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্রের সঠিক যত্ন আপনাকে ভবিষ্যতে অর্থ সাশ্রয়েও সাহায্য করবে। তাই বর্ষায় ঘর পরিষ্কার রাখাকে জীবনের অপরিহার্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করুন এবং নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে আপনার ঘরকে শান্তি ও সুরক্ষার ঠিকানা করুন।

মনে রাখবেন, সুস্থ পরিবেশেই সুস্থ জীবন। বর্ষাকালেও আপনার ঘরকে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য এই সহজ ও কার্যকর উপায়গুলো অনুসরণ করুন এবং বর্ষার সৌন্দর্য উপভোগ করুন নির্ভয়ে ও আরামে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪