OrdinaryITPostAd

যেসব ভুলের কারণে আপনার ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয় না!

আপনি কি জানেন? ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল করার জন্য শুধু ভালো কনটেন্টই যথেষ্ট নয়, কিছু ছোট ছোট ভুলও আপনার প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে।

এই পোস্টে আমরা আলোচনা করবো সেসব সাধারণ কিন্তু মারাত্মক ভুলের কথা, যা আপনার পোস্টকে ভাইরাল হতে বাধা দেয়। যদি আপনি সত্যিই আপনার পোস্টের রিচ বাড়াতে চান এবং হাজার হাজার মানুষের কাছে পড়ড়ৌঁছাতে চান, তাহলে এগুলো জেনে নেওয়া খুবই জরুরি। নিচের সূচিপত্র দেখে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কোন ভুলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে এবং কিভাবে তা ঠিক করবেন।

যেসব ভুলের কারণে আপনার ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয় না!

দুর্বল শিরোনাম বা হুক

ফেসবুক পোস্টের প্রথম লাইন বা শিরোনামই হচ্ছে আপনার কন্টেন্টের হুক — যা পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদেরকে স্ক্রল থামিয়ে পড়তে বাধ্য করবে। যদি এই শিরোনাম দুর্বল, অস্পষ্ট বা নিরস হয়, তবে ব্যবহারকারী আপনার পোস্টে ক্লিক করবে না এবং অ্যালগরিদমও পোস্টটিকে প্রমোট করতে আগ্রহ দেখাবে না।

একটি শক্তিশালী হুক তৈরির জন্য শিরোনামে কৌতূহল তৈরি করুন, সমস্যার সমাধানের ইঙ্গিত দিন অথবা পাঠকের আবেগে স্পর্শ করুন। উদাহরণস্বরূপ, "আপনার ফোনের এই সেটিং বন্ধ না করলে বড় বিপদ হতে পারে!" — এই ধরনের শিরোনাম পাঠকের কৌতূহল বাড়ায় এবং ক্লিক রেট উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে সাহায্য করে।

মনে রাখবেন, প্রথম ৩–৫ সেকেন্ডে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে না পারলে তারা আপনার পোস্ট স্ক্রল করে চলে যাবে। তাই শিরোনাম লেখার সময় সর্বদা লক্ষ্য রাখুন এটি যেন প্রাসঙ্গিক, সংক্ষিপ্ত এবং আবেগময় হয়, একইসাথে SEO কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করে যাতে সার্চ রিচও বৃদ্ধি পায়।

অনাকর্ষণীয় থাম্বনেইল/চিত্র

ফেসবুক পোস্ট বা ভিডিওর থাম্বনেইল (Thumbnail) হচ্ছে সেই প্রথম ভিজ্যুয়াল উপাদান যা ব্যবহারকারীর চোখে পড়ে। যদি এটি অস্পষ্ট, কম রেজোলিউশনযুক্ত বা অনাকর্ষণীয় হয়, তাহলে ব্যবহারকারী স্ক্রল করে চলে যাবে এবং আপনার কন্টেন্টের ক্লিক-থ্রু রেট (CTR) মারাত্মকভাবে কমে যাবে।

একটি আকর্ষণীয় থাম্বনেইল তৈরি করতে উজ্জ্বল রঙ, পরিষ্কার টেক্সট ও মুখভঙ্গি ব্যবহার করুন। মানুষের মুখ বা এক্সপ্রেশন যুক্ত থাম্বনেইল সাধারণত বেশি ক্লিক পায়, কারণ তা আবেগের সাথে যুক্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ, সমস্যা সমাধানের ভিডিওর জন্য থাম্বনেইলে আগে ও পরে (Before-After) ভিজ্যুয়াল দেখালে দর্শক দ্রুত কৌতূহলী হয়ে ওঠে।

থাম্বনেইলের নাম এবং alt text এ প্রাসঙ্গিক SEO কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন, যাতে সার্চ ইঞ্জিনেও এটি ইনডেক্স হয় এবং রিচ বাড়ে। এছাড়া সবসময় হাই-কোয়ালিটি ইমেজ ব্যবহার করুন (নূন্যতম 1080p রেজোলিউশন), যাতে ডেস্কটপ এবং মোবাইল উভয়েই ছবিটি স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

অতিরিক্ত লম্বা বা অসংগঠিত টেক্সট

ফেসবুকে পোস্ট করলে পাঠকরা সাধারণত দ্রুত স্ক্রল করে — তাই অতি লম্বা বা অসংগঠিত টেক্সট হলে তারা পড়া শুরুও করতে চায় না। SEO-এর দিক থেকেও বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ: সার্চ ইঞ্জিন এবং লোকাল অডিয়েন্স দু'টোই সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট ও প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট পছন্দ করে। তাই প্রথম স্ট্যান্ডিং লাইনে মূল কীওয়ার্ড ও মূল বার্তা রাখুন — এটি ১০০ অক্ষরের মধ্যে থাকলে ভালো ইমপ্রেশন দেয়।

টেক্সটকে পড়তে সহজ ও আকর্ষণীয় করতে ছোট প্যারা (২–৩ লাইন), বুলেট পয়েন্ট এবং উপশিরোনাম (H3) ব্যবহার করুন। পাঠকের জন্য দ্রুত স্ক্যানেবল স্ট্রাকচার হলে এনগেজমেন্ট বাড়ে এবং শেয়ারও বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত তথ্য দরকার হলে পোস্টের শেষে “আরও পড়ুন” লিঙ্ক দিয়ে বিস্তারিত ব্লগপোস্ট বা ল্যান্ডিং পেজে পাঠান — এতে ফেসবুকে মূল পোস্টটি সংক্ষিপ্ত থাকে কিন্তু ফুল কনটেন্টও পাওয়া যায়।

SEO মেনে চলার সহজ কিছু নিয়ম: প্রথম 50–100 শব্দে প্রধান কীওয়ার্ড আপাতত ব্যবহার করুন, প্রতিটি প্যারাগ্রাফে স্পষ্ট বাক্য রচনা করুন, এবং প্রয়োজন হলে হ্যাশট্যাগ সীমিতভাবে (২–৪টি) ব্যবহার করুন। মোবাইল ভিউতে ভাল পড়ার জন্য লাইন লেন্থ এবং ফন্ট সাইজ পরীক্ষা করতে ভুলবেন না — অধিকাংশ ব্যবহারকারী মোবাইলেই ফেসবুক দেখে।

দ্রুত চেকলিস্ট:

  • প্রথম লাইনে মূল বার্তা ও কীওয়ার্ড রাখুন।
  • প্যারা ছোট রাখুন (২–৩ লাইন)।
  • বুলেট বা নম্বর ব্যবহার করে তথ্য স্ক্যানযোগ্য করুন।
  • প্রাসঙ্গিক H3 সাবহেডিং দিন যদি বিস্তারিত দিতে চান।
  • পোস্ট শেষে স্পষ্ট CTA (শেয়ার/কমেন্ট/লিংক) দিন

ভুল পোস্টিং টাইমিং

পোস্টটি কখন প্রকাশ করছেন সেটাই অনেকসময় নির্ধারণ করে দেয় আপনার পোস্ট কতটা দ্রুত দেখা ও শেয়ার হবে। ভুল সময়ে পোস্ট করলে—even যদি কন্টেন্ট ভালোও হয়—আপনার টার্গেট অডিয়েন্স তখন অনলাইন না থাকায় ইমপ্রেশন, ক্লিক এবং এনগেজমেন্ট কমে যায়। তাই পোস্টিং টাইমিংকে কৌশলভিত্তিক ভাবা জরুরি।

SEO-এর দিক থেকে মনে রাখবেন: সোশ্যাল সিগন্যাল (লাইক, শেয়ার, কমেন্ট) দ্রুত পাওয়া গেলে পোস্টকে অ্যালগরিদম বেশি প্রদর্শন করে — অর্থাৎ প্রথম ঘণ্টাটা সবচেয়ে মূল্যবান। সুতরাং সেই সময়ে আপনার অডিয়েন্স অনলাইনে আছে কি না সেটা নিশ্চিত করুন। সাধারণভাবে অফিস-ঘণ্টার আগে, দুপুরের বিরতি ও সন্ধ্যা (লোকেরা মোবাইলে বেশি সক্রিয়) ভালো পারফর্ম করে, কিন্তু এটা আপনার নির্দিষ্ট অডিয়েন্স ও নচরালের ওপর নির্ভর করে।

বাস্তব কৌশল: আপনার পেজ বা পোস্টের অ্যানালাইটিক্স চেক করুন (Facebook Page Insights বা Meta Business Suite) — কোন দিন ও কোন সময় আপনার ফলোয়াররা বেশি সক্রিয় তা দেখুন। A/B টেস্ট করে একই কন্টেন্ট বিভিন্ন সময়ে শেয়ার করুন এবং ফলাফল নোট করুন। নিয়ম করে ডাটা বিশ্লেষণ করলে আপনি সপ্তাহের কোন দিন ও নির্দিষ্ট ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রিচ পাচ্ছেন তা চিনে নিতে পারবেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক — এলাকাভিত্তিক টাইমজোন: যদি আপনার অডিয়েন্স আন্তর্জাতিক হয়, তাহলে বিভিন্ন টাইমজোন বিবেচনা করে পোস্ট শিডিউল করুন অথবা একই পোস্ট বিভিন্ন সময় পুনরায় শেয়ার করুন (স্প্যাম না করে কন্টেক্সট পরিবর্তন করে)। শিডিউল টুল (Facebook scheduler, Later, Buffer ইত্যাদি) ব্যবহার করলে সময় মিলিয়ে পোস্ট করা সহজ হয়।

দ্রুত চেকলিস্ট (পোস্ট করার আগে):

  • Page Insights-এ Active Hours পরীক্ষা করেছেন কি?
  • পোস্ট প্রথম ১ ঘন্টার মধ্যে এনগেজমেন্ট বাড়ানোর জন্য আপনি অনলাইনে থাকবেন কি?
  • আপনার টার্গেট অডিয়েন্স যদি দেশের বাইরে থাকে, তাহলে টাইমজোন সমন্বয় করেছেন কি?
  • একই কন্টেন্ট বিভিন্ন সময়ে A/B টেস্ট করে ফলাফল লিপিবদ্ধ করছেন কি?
  • শিডিউল টুল ব্যবহার করে কনসিস্টেন্ট পোস্টিং রুটিন বজায় রাখছেন কি?

টার্গেট অডিয়েন্স নেই

ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার অন্যতম বড় শর্ত হলো সঠিক টার্গেট অডিয়েন্স নির্ধারণ করা। যদি আপনি স্পষ্টভাবে জানেন না কারা আপনার কনটেন্টের মূল দর্শক, তাহলে আপনার পোস্ট অনেকের নিউজফিডে গেলেও এনগেজমেন্ট খুব কম হবে। কারণ ভুল মানুষের কাছে পৌঁছালে কনটেন্টের প্রাসঙ্গিকতা কমে যায় এবং তারা শেয়ার বা কমেন্ট করতে আগ্রহী হয় না।

SEO এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং উভয়ের ক্ষেত্রেই, টার্গেট অডিয়েন্স নির্ধারণ করার সময় বয়স, লিঙ্গ, পেশা, আগ্রহ, লোকেশন এবং অনলাইন অভ্যাস বিবেচনা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি টেক-রিলেটেড কনটেন্ট শেয়ার করেন, তবে টেক-প্রেমী, ছাত্রছাত্রী বা আইটি পেশাজীবীদের কাছে পৌঁছানোই সবচেয়ে কার্যকর হবে।

সঠিক অডিয়েন্স পেতে Facebook Audience Insights ব্যবহার করুন। এই টুল আপনার বর্তমান ফলোয়ারদের ডেমোগ্রাফিক তথ্য দেয় এবং নতুন সম্ভাব্য দর্শক খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এছাড়া পোস্ট বা বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় ‘Detailed Targeting’ অপশন ব্যবহার করে আগ্রহ ও আচরণ অনুযায়ী মানুষ সিলেক্ট করুন।

আরও কার্যকর ফলাফলের জন্য আপনার কনটেন্টের ভাষা, টোন এবং ভিজ্যুয়াল আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করুন। একইসাথে, অপ্রাসঙ্গিক ফলোয়ার সংগ্রহ করার চেয়ে কম কিন্তু সঠিক অডিয়েন্স তৈরি করাই দীর্ঘমেয়াদে বেশি ফলপ্রসূ।

দ্রুত চেকলিস্ট (টার্গেট অডিয়েন্স নির্ধারণের জন্য):

  • আপনার কনটেন্ট কাদের জন্য — স্পষ্টভাবে লিখে রেখেছেন কি?
  • ডেমোগ্রাফিক ডাটা (বয়স, লোকেশন, আগ্রহ) বিশ্লেষণ করেছেন কি?
  • Facebook Audience Insights ব্যবহার করছেন কি?
  • প্রাসঙ্গিক গ্রুপ, পেজ বা কমিউনিটিতে কনটেন্ট শেয়ার করছেন কি?
  • অপ্রাসঙ্গিক ফলোয়ার সংগ্রহ এড়িয়ে যাচ্ছেন কি?

শেয়ার করার মতো ভ্যালু না থাকা

ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো এতে এমন ভ্যালু থাকা যা মানুষ শেয়ার করতে চাইবে। যদি আপনার কনটেন্টে জ্ঞানগর্ভ তথ্য, বিনোদন, আবেগময় বার্তা, বা সমস্যার সমাধান না থাকে, তবে এটি শেয়ারযোগ্য হয় না। ফলে রিচ সীমিত থাকে এবং পোস্ট ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

SEO-এর দিক থেকেও শেয়ারযোগ্য কনটেন্ট গুরুত্বপূর্ণ। যখন বেশি মানুষ আপনার পোস্ট শেয়ার করে, তখন এটি সোশ্যাল সিগন্যাল বাড়ায়, যা আপনার ওয়েবসাইট বা ব্র্যান্ডের অনলাইন উপস্থিতি শক্তিশালী করে। শেয়ারযোগ্য কনটেন্ট সাধারণত সমস্যার সমাধান দেয়, নতুন আইডিয়া উপস্থাপন করে, বা এমন তথ্য শেয়ার করে যা মানুষ তাদের পরিচিতদের জানাতে চায়।

বাস্তব কৌশল হিসেবে—পোস্টে স্পষ্টভাবে ভ্যালু প্রদর্শন করুন, যেমন: "৫ মিনিটে শিখুন...", "বিনামূল্যে ডাউনলোড করুন...", বা "আপনিও করতে পারেন এই সহজ কৌশল"। মানুষ যখন দেখে যে পোস্টটি অন্যের উপকারে লাগতে পারে, তখন শেয়ার করার প্রবণতা বেড়ে যায়।

আপনার কনটেন্টে আবেগ যোগ করাও জরুরি। অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প, মজার মিম, বা চোখ খুলে দেওয়া তথ্য মানুষের মনে বেশি দাগ কাটে এবং শেয়ার বাড়ায়। এ ধরনের কনটেন্ট শুধু এনগেজমেন্টই বাড়ায় না, বরং আপনার ব্র্যান্ড বা প্রোফাইলকে মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ীভাবে স্থাপন করে।

দ্রুত চেকলিস্ট (শেয়ারযোগ্য কনটেন্ট তৈরির জন্য):

  • পোস্টে কি স্পষ্ট ও তাৎক্ষণিক ভ্যালু আছে?
  • কনটেন্ট কি সমস্যার সমাধান বা নতুন তথ্য দিচ্ছে?
  • আবেগময় বা বিনোদনমূলক উপাদান আছে কি?
  • মানুষকে শেয়ার করতে উৎসাহিত করার জন্য CTA আছে কি?
  • পোস্ট কি প্রাসঙ্গিক ও বর্তমান সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?

স্পষ্ট কল-টু-অ্যাকশন (CTA) এর অভাব

একটি সফল ফেসবুক পোস্ট শুধু ভালো কনটেন্টের উপর নির্ভর করে না, বরং পাঠককে পরবর্তী পদক্ষেপে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতার উপরও নির্ভর করে। কল-টু-অ্যাকশন (CTA) হলো সেই নির্দেশনা যা পাঠককে বলে দেয়, পোস্ট পড়ার পর তারা কী করবে—লাইক দেবে, শেয়ার করবে, কমেন্ট করবে, নাকি কোনো লিঙ্কে ক্লিক করবে। স্পষ্ট CTA না থাকলে, অনেকেই আপনার পোস্ট পড়ে ফেললেও কোনো পদক্ষেপ নেয় না, ফলে এনগেজমেন্ট ও ভাইরালিটি কমে যায়।

SEO এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং উভয় ক্ষেত্রেই CTA গুরুত্বপূর্ণ। যখন পাঠককে কোনো নির্দিষ্ট অ্যাকশন নিতে বলা হয়, তখন ক্লিক-থ্রু রেট (CTR) এবং কনভার্সন রেট বেড়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, “এখনই পড়ুন”, “বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন” বা “আপনার মতামত জানিয়ে কমেন্ট করুন”—এই ধরনের CTA শুধু মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ায় না, বরং পোস্টের রিচও বাড়ায়।

একটি কার্যকর CTA ছোট, স্পষ্ট এবং অ্যাকশন-ওরিয়েন্টেড হওয়া উচিত। যদি পোস্টে লিঙ্ক থাকে, তাহলে লিঙ্কটি চোখে পড়ার মতোভাবে প্রদর্শন করুন এবং ক্লিক করার উপকারিতা স্পষ্ট করুন। ইমোশনাল ট্রিগার ব্যবহার করাও উপকারী—যেমন জরুরিতা (এখনই), এক্সক্লুসিভিটি (শুধু আপনার জন্য), বা সুবিধা (ফ্রি, সহজ, দ্রুত)।

দ্রুত চেকলিস্ট (কার্যকর CTA তৈরির জন্য):

  • পোস্টে কি স্পষ্টভাবে বলা আছে পাঠককে কী করতে হবে?
  • CTA কি ছোট এবং সহজে বোঝা যায়?
  • ক্লিক বা শেয়ারের উপকারিতা কি উল্লেখ করা হয়েছে?
  • ইমোশনাল বা এক্সক্লুসিভ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে কি?
  • CTA কি পোস্টের মূল উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?

কমেন্ট/মেসেজে এনগেজমেন্ট উপেক্ষা

ফেসবুকের অ্যালগরিদম এমন পোস্টকে বেশি রিচ দেয় যেগুলোতে সক্রিয় এনগেজমেন্ট হয়—যেমন লাইক, কমেন্ট, শেয়ার এবং মেসেজ। কমেন্ট বা মেসেজে সাড়া না দেওয়া মানে আপনি নিজের অডিয়েন্সের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সুযোগ হারাচ্ছেন। যখন পাঠকরা প্রশ্ন করে বা মতামত দেয়, তখন তাদের উত্তর দিলে তারা আরও বেশি সংযুক্ত বোধ করে এবং ভবিষ্যতে আপনার পোস্টে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

SEO-এর দিক থেকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। সক্রিয় এনগেজমেন্ট সোশ্যাল সিগন্যাল বাড়ায়, যা আপনার ব্র্যান্ড বা পেজের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করে। গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন সরাসরি ফেসবুক কমেন্ট ইনডেক্স না করলেও, বেশি এনগেজমেন্ট হওয়া পোস্টগুলোর লিঙ্ক ও রেফারেন্স প্রায়ই অন্য সাইটে শেয়ার হয়, যা ব্যাকলিঙ্ক তৈরিতে সাহায্য করে।

পাঠকের কমেন্ট বা মেসেজে উত্তর দেওয়া মানে শুধু সৌজন্য নয়, বরং এটি কনভার্সন ও গ্রাহক সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এমনকি এক শব্দের রিপ্লাই বা ইমোজি রিঅ্যাকশনও আপনার সক্রিয় উপস্থিতি বোঝায়। এটি আপনার পেজকে আরও মানবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ করে তোলে।

দ্রুত চেকলিস্ট (এনগেজমেন্ট বজায় রাখার জন্য):

  • সব কমেন্টের উত্তর বা রিঅ্যাকশন দেওয়ার চেষ্টা করুন।
  • ইনবক্স মেসেজে দ্রুত রিপ্লাই দিন।
  • প্রশ্ন থাকলে ফলো-আপ প্রশ্ন করুন যাতে কথোপকথন বাড়ে।
  • নতুন কমেন্টকারীদের ধন্যবাদ জানান।
  • এনগেজমেন্ট ট্র্যাক করার জন্য ফেসবুক পেজ ইনসাইটস ব্যবহার করুন।

প্রাইভেসি সেটিং বা শেয়ার লিমিট

আপনার ফেসবুক পোস্টের প্রাইভেসি সেটিংস যদি সঠিকভাবে না থাকে, তাহলে পোস্টটি অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে না। ব্যক্তিগত (Private) বা বন্ধুবান্ধব সীমিত (Friends Only) সেটিংস করলে শুধু আপনার পরিচিতরা পোস্ট দেখতে পায়, যা ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

এছাড়া, কিছু ক্ষেত্রে ফেসবুক শেয়ার লিমিট আরোপ করে যাতে খুব বেশি মানুষ একসাথে শেয়ার করতে না পারে। এই শেয়ার লিমিট বা রিসট্রিকশন থাকলে পোস্টের রিচ কমে যায় এবং ভাইরাল হওয়া কঠিন হয়। তাই, পোস্টের প্রাইভেসি সঠিকভাবে পাবলিক (Public) করুন এবং নিয়মিত নিয়মিত শেয়ার পরিমাণ যাচাই করুন।

SEO-এর জন্য পাবলিক পোস্ট ভালো কারণ এটি সার্চ ইঞ্জিনেও ইনডেক্স হয়, যা আপনার কনটেন্টের অনলাইন উপস্থিতি বাড়ায়। পোস্টে পাবলিক সেটিং না দিলে তা সার্চ রেজাল্টে দেখা যাবে না, ফলে ট্রাফিকের উৎস সীমিত হয়ে পড়ে। যদি আপনার পোস্ট প্রাইভেসি সঠিক না থাকে, তাহলে ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।

দ্রুত চেকলিস্ট (প্রাইভেসি ও শেয়ার লিমিট ঠিক করার জন্য):

  • পোস্টের প্রাইভেসি পেজে গিয়ে পাবলিক (Public) সেটিং নিশ্চিত করুন।
  • শেয়ার লিমিট বা রিসট্রিকশন সম্পর্কে ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করুন।
  • বড় অডিয়েন্সের জন্য পাবলিক গ্রুপ বা পেজ ব্যবহার করুন।
  • পোস্ট শেয়ার করার সময় নিয়মিত মনিটরিং করুন যাতে শেয়ার ব্লক না হয়।
  • ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলুন যাতে শেয়ার লিমিট বা ব্যান এড়ানো যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪